সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
সালথায় বল্লভদী সাহিত্য উৎসব ও সম্মাননা প্রদান মুকসুদপুরে ইউএনও’র সাথে সাংবাদিকদের মত বিনিময় মুকসুদপুরে সরকারি সাবের মিয়া জসিমুদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ত্রুীড়া প্রতিযোগিতা মুকসুদপুরে সিনজেনটার কীটনাশক নকল ও ভেজাল প্রতিরোধে করনীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত মুকসুদপুরে ৫৩ তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত মুকসুদপুর পৌরসভার সেবা কার্যক্রম স্থবির, চরম দুর্ভোগে পৌরবাসী মুকসুদপুরে দেশীয় অস্ত্র ও পিক-আপসহ ৬ ডাকাত আটক গোপালগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন এম. আনিসুল ইসলাম ভুলু কোটালীপাড়ায় নবাগত ইউএনওর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা মুকসুদপুরে ৪৬তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন
”মা” ডেকে অভিনব কৌশলে ১০ লাখ টাকা চুরি

”মা” ডেকে অভিনব কৌশলে ১০ লাখ টাকা চুরি

তারিকুল ইসলামঃ
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের বাগাইদিয়া গ্রামের মিরন শিকদার একজন বহুরূপী প্রতারক। কখনো পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার আত্মীয়, আবার কখনো প্রভাবশালী ব্যবসায়ী কিংবা উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা সেজে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। তাঁর প্রতারণায় সর্বসান্ত হয়েছে অনেক পরিবার। প্রতারণার টাকা দিয়ে অল্প সময়েই বনে গেছেন বিপুল টাকার মালিক। এমন অনেক প্রতারণার গল্প আছে তার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতারক মিরন শিকদার বাগাইদিয়া গ্রামের রসু শিকদারের ছেলে। কর্মজীবনের শুরুতে গ্রামে কৃষি কাজ করতেন। পরবর্তী সময়ে ছিনতাই ও প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নিজের গ্রামের বাড়িতে দুটি সুন্দর আলিশান বাড়ি করেছেন। স্ত্রী মিতা মজুমদার ওরফে পলি বেগমকে নিয়ে করে বেড়ান বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা। সহজ সরল মানুষকে ঠকিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়াই তাদের কাজ। মুকসুদপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে চুরি ও প্রতারণার অভিযোগে কয়েকটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি সে হাজত বাসও করেছেন।
এমন অনেক প্রতারণার গল্প আছে তার। তবে এবারের প্রতারণার গল্পটা একটু ভিন্ন রকম। মিরন প্রতারণার এক মামলায় গোপালগঞ্জ জেল হাজতে থাকাকালীন সময়ে তার সাথে পরিচয় হয় পার্শ্ববতী মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার গঙ্গাবর্দী গ্রামের জুলহক তপাদারের ছেলে মিন্টু তপাদারের সাথে। মিন্টু তপাদার স্ত্রীর করা মামলায় জেলে ছিলেন। জেল থেকে দু’জনের সাথে বন্ধুত্বের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। মিন্টু তপাদার জেল থেকে মিরন তপাদারের আগে জামিনে বের হয়। জামিনে বের হওয়ার সময় মিরন শিকদার মিন্টু তপাদারকে তার বাড়ির ঠিকানা এবং তার স্ত্রীর মোবাইল নাম্বার দিয়ে বলে তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাকে জেল হাজত থেকে জামিনে বের করার জন্য। পরবর্তীতে মিন্টু তপাদার মিরনের বাড়িতে এসে তার বাবার সাথে যোগাযোগ করে তাকে ছাড়ানোর অনুরোধ জানায় এবং নিজে টাকা দিয়ে সহযোগিতা তার জামিনের ব্যবস্থা করে। মিরন শিকদার জামিনে বের হয়ে মিন্টু তপাদারকে ফোনে বলে বাড়িতে যাওয়া যাবেনা। তুমি আমাকে তুমার বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করো। পরবর্তীতে মিন্টু তপাদার তার মা আমেনা বেগম কে ফোন করে তাদের বাড়িতে নেয়ার কথা বলে। বাড়িতে যাওয়ার পরে মিরন তার স্ত্রী পলি বেগমকে দিয়ে তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। তারা উভয় মিন্টু তপাদারের মাকে মা বলে ডাকে। তাদের সাথে নিবীড় সর্ম্পক গড়ে তোলে। গত ইংরেজী ৩০ জুন তারিখে মিন্টু তপাদারের বাড়িতে মিরন শিকদার তার স্ত্রী নিয়ে বেড়াতে যায়। সে সময় মিন্টু তপাদারের মা জমি বিক্রি করার ৪ লাখ টাকা এবং বৈদ্যুতিক তারের লাইন ভবনের উপর দিয়ে নেয়া এবং তার গাছ কাটার ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত ৬ লাখ টাকা মোট ১০ লাখ টাকা তাদের দুজনের সামনে ঘরে ভিতরে রাখেন। পরবর্তীতে মিরন শিকদার তার স্ত্রী পলি বেগমকে নিয়ে বাজার থেকে তার মার জন্য হালিম কিনে আনেন। হালিম খাওয়ার পরে আমেনা বেগম অচেতন হয়ে পড়লে তারা অভিনব কায়দায় টাকা চুরি করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তাদের অনেক খোঁজ খবর করে না পেয়ে রাজৈর থানায় মিরন শিকদার এবং তার স্ত্রী পলি বেগমকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় মিন্টু তপাদারের মা এবং তার পরিবার মিরন শিকদারের বাড়িতে আসলে তার মা টাকা চুরির কথা স্বীকার করে বলেন, আমার সাথে আমার ছেলের যোগাযোগ নেই। এ বিষয়ে মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী এবং ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য নিয়ামত আলী শিকদারকে মিন্টু তপাদারের পরিবারের লোকজন অবহতি করেছেন। মিন্টু তপাদারের মা আমেনা বেগম সর্বসান্ত হয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2024 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com