মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় প্রতিশোধ নিতে সোহাগ সরদার (২৫) নামে এক যুবকের কান কেটে উল্লাসের ঘটনায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার টুঙ্গিপাড়া থানায় সোহাগ সরদারের মা বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন।
আসামীরা হলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শেখ শুকুর আহম্মেদ (৫৫) , তার ছেলে রাজিব শেখ (২৫), রাজিব শেখের সহযোগি নিয়ামত শেখ (২৫). মোঃ আবেদ আলী শেখ (৫০), জুয়েল শেখ (২৪), নাজমুল শেখ (২৩), বোরহান শেখ (৪০) ও শফিক শেখ (৩৬)।
সোহাগ সরদারের মা কোহিনূর বেগম জানান, ঢাকা যাওয়ার জন্য তার ছেলে সোমবার বিকেল ৪ টার দিকে টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী দোলা পরিবহনের কাউন্টারে যায়। সেখানে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা প্রতিবেশী টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শ্রীরামকান্দি গ্রামের শেখ শুকুর আহম্মেদের ছেলে রাজিব শেখের নেতৃত্বে ৮/৭ জন লোক তার ওপর হামলা করে। তাকে মারপিট করে ধারালো এন্টিকাটার দিয়ে বাম কান সম্পূর্ন কেটে নিয়ে পলিথিনে ভরে উল্লাস করতে করতে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।
তার ছেলে সোহাগ সরদারের স্ত্রীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে রাজিব শেখ অনৈতিক সম্পর্ক চলে আসছিলো । এ নিয়ে রাজিব ও সোহাগ সরদারের মধ্যে মারামারি হয়েছে। এমনকি এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলা মকদ্দমাও রয়েছে। পূর্ব শত্রæতার জের ধরেই পরিকল্পিত ভাবে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তিনি জানান।
টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি এ.কে.এম এনামুল কবির বলেন, এ ঘটনায় ৮ জনকে আসামী করে সোহাগের মা কোহিনূর বেগম একটি মামলা করেছেন। ইতিমধ্যে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, সোহাগের স্ত্রীর সাথে প্রতিবেশি ও সোহাগের বন্ধু রাজিবের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এটি টের পেয়ে সোহাগ বন্ধু রাজিবের কান কাটার পরিকল্পনা করে। গত ৬ মে রাজিবের মোটর মোটর সাইকেলে দু’বন্ধু সোহাগ ও রাজিব ঘুরতে যায়। রাজিব মোটর সাইকেল ড্রাইভ করছিলো। আর সোহাগ পেছনে বসে ছিলো। এক পর্যায়ে ধারালো অন্ত্র দিয়ে সোহাগ বন্ধু রাজিবের কান কেটে দেয়।
পরে সেখান থেকে সোহাগ পালিয়ে যায়। এ নিয়েই দু’ বন্ধুর মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। প্রতিশোধ নিতেই রাজিব গত সোমবার সোহাগের কান কেটে দিয়েছে।
রাজিবের পিতা টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শেখ শুকুর আহম্মেদ পাল্টাপাল্টি কান কেটে কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, সোহাগ আমাদের প্রতিবেশি। তাদের সাথে আমাদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
সোহাগের স্ত্রীর সাথে আমার ছেলের কোন সম্পর্ক নেই। এটি আমার প্রতিপক্ষ রটাতে পারে বলে আমার ধারণা। তবে আমাকে মিথ্যা মমলায় জড়ানো হয়েছে। এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।
টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি একেএম এনামুল কবির বলেন, মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এখনো ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।