বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৫:২৭ অপরাহ্ন

মুকসুদপুরে আনসার ভিডিপি অফিসারের বিরুদ্ধে পূজার ডিউটিতে লোক নিয়োগে ১০ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ

মুকসুদপুরে আনসার ভিডিপি অফিসারের বিরুদ্ধে পূজার ডিউটিতে লোক নিয়োগে ১০ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ

বাংলার নয়ন সংবাদঃ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার সাইফুল ইসলামের নামে আসন্ন দূর্গাপূজার ডিউটিতে লোক নিয়োগে টাকা নেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একাধিক অভিযোগ দাখিলের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে তার বিরুদ্ধে এ লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এ পুজা মৌসুমে ভিডিপি অফিসারের আদায় হবে ১০ লাখ টাকার বেশী।

মুকসুদপুর পৌরসভার টেংরাখোলা গ্রামের হামিদ মোল্যার ছেলে আকরাম মোল্যার দায়েরকৃত অভিযোগে দেখা যায় ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সে আনসার ভিডিপি অফিসারের নিকট পূজার ডিউটি চাইতে গেলে তাকে জনপ্রতি ৪শ টাকা দাবি করে। জনপ্রতি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে কোন ডিউটি দেয়া হয়নি। এছাড়াও তিনি মুকসুদপুরে যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম করে আসছে। মুকসুদপুর উপজেলায় পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নে মোট ২শ৭৭টা পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ তিনি সারা উপজেলা থেকে তিনি কয়েক লাখ টাকার বানিজ্য করেছেন। তার দাবীমত সারা উপজেলার পিসি, এপিসি আনসার বাদে সাধারন ভিডিপি ১৯৫৬ জনের কাছে থেকে পিসি এপিসিদের মাধ্যমে ৫শ টাকা করে আদায় শেষে অফিসারের কাছে ৪শ করে জমা দেয়। এতে এই পুজা মৌসুমে অফিসারের আদায়কৃত টাকার পরিমান দাড়ায় ৭ লাখ ৮২ হাজার টাকার বেশী। যদি তিনি পিসি ও এপিসি দের থেকে টাকা নেন তাহলে এ মৌসুমে ভিডিপি অফিসার সাইফুলএর আদায়কৃত টাকার পরিমান দাড়াবে ১০ লাখ টাকার বেশী।

অভিযোগকারী আকরাম মোল্যা জানান আমি এর আগেও অনেকবার নির্বাচন এবং পূজার ডিউটি করে আসছি এবার পূজায় ডিউটি আনতে গেলে আমার টাকা দাবি করেছে। টাকা দিতে পারিনি বলে আমাকে ডিউটি দেয়া হবেনা বলে জানিয়েছে। এছাড়াও তিনি জানান সে যে টাকা দাবি করেছে সে কথা কাউকে বলতে নিশেষ করেছে এবং কাউকে দিয়ে তদবির করালেও কোন ডিউটি দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে।

অন্য অভিযোগকারী মশিউর শেখ জানায় আমি আনসার ভিডিপির প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত হওয়া সত্বেও আমাকে দল দেয়া হয়নি এবং আমার কাছ থেকে জনপ্রতি ৪শ টাকা করে দাবি করেছে। দিতে পারিনি বলে আমাকে ডিউটি দেয়া হয়নি। আমাকে অফিস থেকে দুব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এলাকাসুত্রে জানাগেছে লখাইরচরের হেলাল একই গ্রামের মসলেম বিশ্বাসের ছেলে জুলকার, চন্ডিবর্দী গ্রামের বকুল মুকসুদপুর সদর বাজার সোনালী ব্যাংক মোড়ের চা বিক্রেতা রুহুল শেখ, কমলাপুর গ্রামের কাউছারের ছেলে আলিম একই গ্রামের সোহরাবের ছেলে রুহুলসহ চিহিৃত ১০/১২জন পিসি সদস্য আনসার ভিডিপি অফিসারের কাছ থেকে ফরম নিয়ে জনপ্রতি ৫শ টাকা নিয়ে লোক দিয়ে আনসার অফিসে জনপ্রতি ৪শ টাকা জমা দিচ্ছে।
এছাড়াও একই দাবিতে অভিযোগ করেছে কাশালিয়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে রফিকুল ইসলাম, কৃষ্ণাদিয়া গ্রামের সোহরাব শেখের ছেলে মশিউর।
মুকসুদপুর পৌর আওয়ামী লীগ সম্পাদক সেলিম মোল্যা জানান তার এক নিকটজন দুর্গাপুজায় আনসার ডিউটি করার জন্য সুপারিশ করলে তিনি তার কাছে টাকা দাবী করেন। তার পাঠানো ভিডিপি সদস্য কাংখিত টাকা না দেওয়ায় তাকে ডিউটি থেকে বাদ দিয়েছে। আমি তদবির করেছি বলেই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। তিনি মৌখিক ভাবে বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে।
এব্যাপারে মুকসুদপুর উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার সাইফুলের সাথে তার ব্যবহৃত মোবাইলে ০১৭২২৭৯১২০২ একাধিকবার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে একটি খুদেবার্তা পাঠালে তিনি খুদেবার্তার জবাবে একটি ইমেইেল এ্যাড্রেস দিয়ে বলেন ‘কোন অভিযোগ থাকলে মেইল করুন। পরে দেখে নেবো’।
মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমা আলী জানান এমন লিখিত অভিযোগ ও মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমার দপ্তর থেকে দ্রুত অনুসন্ধানসহ তিনি দোষী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও জানান প্রতিটি পূজা মন্ডপে ৫০০ কেজি করে সরকারের চাল বরাদ্দ রয়েছে।
গোপালগঞ্জ আনসার ভিডিপির জেলা কামান্ডেন্ট ফেরদৌস আহমেদ বিশেষ ছুটিতে ভারতে যাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল পাশা এবং সেকেন্ড অফিসার জহিরুল ইসলাম জানান মুকসুদপুর উপজেলার ২৭৭ পূজা মন্ডপে নিরাপত্ত জোরদারের জন্য পুলিশের কড়া নজর থাকবে এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়নের ১৪জন করে গ্রাম পুলিশ এবং উপজেলা থেকে পিসি ৮২ জন, এপিসি ২৭৭, সাধারণ পুরুষ ভিডিপি ১ হাজার ১শ ১০, সাধারণ নারী ভিডিপি ৮শ ৪৬ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেয়া হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2018 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com