রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন
তারিকুল ইসলামঃ
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ২ং পশারগাতী ইউনিয়নের সর্বত্র সরগরম হয়ে উঠছে। উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দুরে পশারাতী ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের ১০,৭০৫জন ভোটার, পুরুষ ভোটার ৫৪০৮ জন এবং নারী ভোটার ৫২৯৭ জন। অত্র ইউনিয়নের গ্রামে গঞ্জে বিশেষ করে চায়ের দোকান জমে উঠেছে আলোচনার ঝড়। চায়ের কাপের ধোয়ার সাথে চলছে পক্ষে বিপক্ষের প্রার্থীদের রাজনৈতিক ও পারিবারিক কর্মকান্ড নিয়ে চুল চেরা বিশ্লেষন। কে হবেন নৌকার প্রতীক এবং কারা হবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ নিয়েও চলছে আলোচনার ঝড়। বিগত নির্বাচনে দলের বাইরে থেকে দলীয় মনোনয়ন পেলেও এ বছর দলের একনিষ্ঠ কর্মীদের মধ্য থেকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। দলীয় সম্ভব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যে উপজেলা কমিটি ও সংসদ সদস্য মুঃ ফারুক খানের কাছে দৌড় ঝাপ শুরু করেছেন। সে সংগে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, উঠোন বৈঠক। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নির্বাচনি উপস্থিতির জানান দিচ্ছেন তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভোটারদের কাছে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন, সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউয়িন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মজি কাজী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঃ রহমান মীর, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সোয়েবুর রহমান সালমিন মিয়া, বর্তমান চেয়ারম্যান স্বপন মিয়া ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজ সেবক কবির শেখ।
পশারগাতী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও হেভিওয়েট প্রার্থী আব্দুর রহমান মীরের সংগে আলাপকালে তিনি জানান, পশারগাতী ইউনিয়নের রাস্তাঘাট এবং অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিশুদের শরীর চর্চার জন্য খেলা মাঠ উন্নয়ন তার অন্যতম লক্ষ্য। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউনিয়নের অধিন যে সমস্ত হাটবাজার অবহেলিত রয়েছে তা সংস্কারের উদ্যোগ নিবেন বলে তিনি জানান। দল থেকে তাকে নৌকা প্রতিক দেওয়া হলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনি জয়ী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
পশারগাতী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মজিবুর রহমানের সাথে প্রাসংগিক বিষয়ে আলাপকালে তিনি জানান, উপজেলা পরিষদ থেকে তিনি শ্রেষ্ট চেয়ারম্যান হিসাবে ২ বার নির্বাচিত হয়েছেন এবং গোপালগঞ্জ জেলা থেকেও তিনি ২ বার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। দল থেকে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার আমলে পশারগাতী ইউনিয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। বিশেষ করে রাস্তাঘাট উন্নয়নে তার ছিলো ব্যাপক ভূমিকা। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউনিয়নের উন্নয়নের লক্ষে তিনি কর্মউদ্যোগের বিষয়ে ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি তার পরিকল্পনা গুলি সম্পূর্ণ করতে পারবেন বলে জানান। তবে তাকে যদি দল থেকে মনোনয়ন না দেওয়া হলে দলের সিদ্ধান্তকেই তিনি মাথা পেতে নিবেন এবং দলের প্রার্থীর জন্য কাজ করবেন।
পশারগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক সোহেবুর রহমান সালমিন মিয়ার সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, পশারগাতী ইউনিয়নের জনগন মিয়া পরিবারকে ভালবাসে জনগন চাইলে নিবার্চন করবেন তিনি। তার বাবা দাদার বিগত সময়ে পশারগাতী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ছিলেন পরবর্তীতে বড় ভাই মরহুম মিরন মিয়া চেয়ারম্যান নির্বাচন হন। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। সে নির্বাচিত হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করবেন এই তরুণ প্রার্থী। এছাড়া মাদক ও দুর্নীতি মুক্ত আধুনিক ইউনিয়ন গড়ার লক্ষ্যে ব্যাপক ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ঘোষনা করেন।
ব্যবসায়ী কবির শেখ জানান, আমি সতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবো আমার কাজ যুব সমাজ কে মাদক মুক্ত করা ও দুর্নীতি মুক্ত আধুনিক ইউনিয়ন গড়ার লক্ষ্যে জনগনের পাশে থেকে সার্বক্ষনিক ভাবে কাজ করে যাবো। ইতিপূর্বেও তিনি পশারগাতী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতস্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেছিলেন কিন্তু অবস্থার প্রেক্ষিতে তিনি আশানরুপ ফলাফল পাননি। এ বছর সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তিনি নির্বাচিত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, চেয়ারম্যান না হয়েও তিনি ইউনিয়নের জনগনের সেবায় বিগত ৫ বছর কাজ করেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসহায় মানুষদের পাশে দাড়িয়ে সাধ্যানুযায়ী হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। জনগন তার প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তাতে তিনি আগামী নির্বাচনে জয়ী হবেন এমন প্রত্যাশা করেন কবির শেখ।
বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান স্বপন মিয়া মুঠোফোনে আলাপকালে জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এখনও তিনি সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। তবে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করবেন এবং দল যদি তাকে মনোনয়ন দেন তবেই তিনি নির্বাচনে আসবেন।
যেহেতু মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগর শক্ত ঘাটি সেহেতু নৌকার প্রার্থীদের জয়ের সম্ভাবনাই অধিক। বিগত বছরের চেয়ে আগামীতে প্রার্থী মনোনয়নে অধিক যাচাই হতে পারে। স্থানীয় নির্বাচন হলেও দলীয় প্রতিক বরাদ্দের জন্য যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেওয়া হবে এমন প্রত্যাশা ইউনিয়নবাসীর।