মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
মুকসুদপুরে সরকারি জায়গা দখল নিয়ে দুই ইউনিয়নবাসীর সংঘর্ষ, আহত অর্ধ শতাধিক নাগেশ্বরীতে রাতের আঁধারে ঘর তুলে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল এডাব- এর ভাইস চেয়ারম্যান হলেন আরিফুর রহমান ডিআরই্উ’র নতুন সভাপতি সালেহ আকন, সোহেল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত রমজানে মাছ মাংসের চাহিদার বিপরীতে উদ্বৃত্ত খাদ্য অন্য বিভাগে পাঠাতে হবে- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা রাজৈরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পাগলা মসজিদে মিললো ২৯ বস্তা টাকা, চলছে গণনা কারিগরী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিশুদের মাঝে ইপসা’র সার্টিফিকেট প্রদান লোক দেখানো নয়, মৌলিক পরিবর্তনই সরকারের প্রধানতম লক্ষ্য- সুপ্রদীপ চাকমা পশুরহাটে ‘খাস আদায়ে’ হরিলুট
ফরিদপুরে মাছ ধরার পলো উৎসবে হাজারো মানুষ

ফরিদপুরে মাছ ধরার পলো উৎসবে হাজারো মানুষ

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ‘মাছ ধরার পলো উৎসব’ গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্য। আগে এই উৎসব সচরাচর দেখা গেলেও বর্তমানে তা খুব একটা দেখা যায় না।

ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের চরবিষ্ণুপুর এলাকার কাইজার বিলে মাছ ধরার পলো উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। হাজারো মানুষ অংশ নেয় এই উৎসবে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল ৭টায় ফরিদপুর সদর উপজেলায় কাইজার কোলে পলো উৎসবের আয়োজন করে স্থানীয় যুব সমাজ। প্রায় ৫ ঘন্টাব্যাপী চলে এই উৎসব। হাটু পানি থেকে মাজা পানিতে শত শত মানুষ মাছ ধরতে নামে।

সূর্য উদয়ের পূর্বেই হাজারো মানুষের ঢল নামে কাইজার কোল নামক বিল এলাকাটিতে। কারো হাতে পলো, কারো হাতে জাল সহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরন। দূর দূরান্ত থেকে পলো হাতে নিয়ে পায়ে হেটে আনন্দ ফুর্তি করতে করতে মাছ ধরার উৎসবে এসেছেন নানা বয়সী মানুষ। উৎসবে কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও অংশ নেন।

জেলা সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন থেকে আগত মোহাম্মদ রতন শেখ জানান, গতকাল মাইকমিশনার পরে সন্ধ্যার সময় দেড়শ টাকা দিয়ে একটি পলো কিনে আজ বিশ কিলোমিটার দূর থেকে এখানে মাছ মারতে আসি। এধরনের হারিয়ে যাওয়া উৎসব দেখতে এসে খুব ভালো লাগে। আমাদের এলাকায় বিভিন্ন প্রজেক্ট হয়ে যাওয়ার কারণে খাল বিল ভরে গেছে। মাছ মারার উৎসবে যোগ দিতে এখানে আসছি। মাছ পাই বা না পাই তাতে কোন দুঃখ নাই ।

মাছ ধরতে কোলে নামা মানুষগুলো জানালেন তাদের অনুভুতির জানাতে স্থানীয় বাসিন্দা নুরু মোল্লা জানান, এই বিলটাকে আমরা কোল বলে থাকি। বহু আগে এখান থেকে আমরা মাছ মারতাম। মাঝে কিছু ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা পুলিশ নিয়ে এসে আমাদেরকে বাধা দিতো। এই নিয়ে অনেক কাইজার হইতো। মাছ ধরা নিয়া এসব মারামারি বা কাইজের কারণে এই বিলের নামক কাজের বিল নামে পরিচিত। আমি ঢাকায় থাকি দীর্ঘদিন পরে বাড়ি আসছি। আজ পলো নিয়ে এখানে মাছ মারতে আসছি খুব ভালো লাগতেছে।

প্রকৃতিক পরিবেশে বেড়ে উঠা দেশী প্রজাতিসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ আছে বিলটিতে। রুই কাতল বোয়াল, টেংরা পুটি কই বিভিন্ন ধরনের মাছ এখানে পাওয়া যায়। তাই মাছ মারার আগ্রহীরা জড়ো হন এখানে। তবে বিলে প্রচুর কচুরিপানা ও ঘাসপাতা থাতায় মাছ ধরতে বেগ পেতে হয় তাদের।

আশিউদ্ধ বয়-বৃদ্ধ জামাল উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন পরে স্থানীয় যুবকেরা ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এই মাছ ধরার উৎসব আয়োজন করে। গত দুই দিন যাবৎ পলো উৎসবের মাইকিং করা হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া এমন উৎসবে যোগ দিয়েছেন হাজারো মানুষ। এই কোলে, চায়না দোয়ারী, কারেন্ট জাল, ভেসাল দিয়ে মাছ মারা হতো। প্রশাসন এটা বন্ধ করায় আমরা এই উৎসবের আয়োজন করেছি। হারানো ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এই আয়োজন। প্রতিবছর যাতে এধরনের আয়োজন করতে পারি, সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়।

অপর আয়োজক মোহাম্মদ তুহিন মিয়া জানান, কাইজের কোলের মাছ ধরা নিয়ে সকল বিভেদ ভুলে গিয়ে গ্রাম বাংলার হারানো ঐতিহ্য পলো উৎসব ধরে রাখতে প্রতিবছর আয়োজন করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

 

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2024 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com