বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২০ অপরাহ্ন
বাংলার নয়ন সংবাদঃ
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারি ইউনিয়নের পশ্চিম বাহাড়া গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে খুনের ঘটনায় মামলা পাল্টা মামলায় প্রতিপক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাংচুর ও কয়েক কোটি টাকার মালামাল লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ও শনিবার প্রতিপক্ষের লোকজন খুনের মামলার দায়ে বাড়ি ছাড়া থাকলে দিনব্যাপী কয়েকটি বাড়ি ব্যাপক হারে ভাংচুর ও লুটপাট করে।
গত ১২ এপ্রিল রবিবার রাতে বাহাড়া পশ্চিমপাড়া মাতুব্বরবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম সাহেব সরকার ঘোষিত নির্দেশনা অনুযায়ী ৫ জনের বেশি লোক মসজিদে আসতে অনুরোধ করেন। কিন্তু স্থানীয় কিছু লোক বিষয়টি মানতে না চাইলে মসজিদে উপস্থিত মজিবর শেখ ও মতি মাতুব্বর দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের আলোচনার মাধ্যমে এশার নামাজের পরে বিষয়টি সমাধান হয়ে যে যার মত করে নামাজ পড়বে। কিন্তু পরের দিন সকালে ১৩ এপ্রিল সোমবার বিবাদ মান দুই গ্রুপের পূর্বের একটি জমির উপর ঘর উঠানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উক্ত সংঘর্ষে মজিবর শেখের ছেলে সুজন শেখ ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং অপর পক্ষের দুই নারী মারাত্মক আহত হলে তাদেরকে ফরিদপুর ২৫০ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঐদিন মজিবর শেখের পক্ষের লোকজন (মুন্সী বাড়ি, খন্দকার বাড়ি) বিবাদি পক্ষের (বাকি মাতুব্বরের) বাড়িতে ব্যাপোক লুটতরাজ চালায়। ঘরবাড়ি, গবাদিপশু সহ বাড়ির নূনতম বদনা পর্যন্ত লুট করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মজিবর শেখ একটি খুনের মামলা দায়ের করেন এবং মামলার ভয় দেখিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু করে যা এখনো চলমান। প্রতিটি ইটের ঘরের জানালা, দরজা, ইট এবং টিনের ঘরের টিন,কাঠ এবং ঘরে থাকা যাবতীয় মালামাল লুট করে নিয়েছে।
মজিবর শেখ তার মামলায় এমন কিছু লোকজনকে আসামি করেন যাঁরা তার এই জঘন্য কাজে সমথর্ন দেয়নি এবং অংশগ্রহণ করেনি। এখন তারা গ্রামের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে লুটের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে নিয়মিত ভাবে। তাকে প্রত্যক্ষ্যভাবে সহযোগিতা করছে মিজান মুনসী ও মহিউদ্দিন খন্দকার। তাদের হয়রানির ভয়ে গ্রামের অসহায় মানুষগুলো গ্রাম ছাড়া।
মজিবর ও তার মদদদাতা গ্রুপের বিষয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে অবগত করা হলেও তারা অপারগতা প্রকাশ করা ছাড়া কিছুই করতে পারেনি বলে জানাযায়।
মুকসুদপুর থানার ওসি মীর্জা আবুল কালাম আযাদ বাংলার নয়নকে জানান বাহাড়া গ্রামে খুন এবং খুন পরবর্তী লুটপাটের ঘটনায় দুটি মামলারই তদন্তকারি অফিসার মীর সাজেদুর রহমান। তিনি জানান খুনের মামলা ও লুটের মামলার দুটোই তদন্ত চলছে। দুটো ঘটনাই সত্যি। যারা খুন করেছে তারা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। এদিকে খুনের মামলার বাদী নিজেই এবং তার স্বপক্ষীয় লোকজন খুনের মামলার আসামীদের বাড়ী গিয়ে লুট করার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। দুটি ঘটনার ই সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের চিহিৃত করে বিচারের জন্য আদালতে পাঠাবো।। মুকসুদপুর থানার ওসি মীজা আবুল কালাম আজাদ জানান এই করোনার সময়ে আমরা একটানা ৮ দিন ঘটনাস্তলে পুলিশ রেখেছি। পুলিশের চোখ এড়িয়ে কেউ লুটপাটের মত ঘৃণিত কাজ করেছে। খুনের জন্য আসামীদের বিচারে যেমন কাঠ গড়ায় দাড়াতে হবে তেমনি লুটের সাথে যারা জড়িত তারাও আইনের জাল থেকে ছাড় পাবে না। এখানে পুলিশি টহল আরও জোরদার করা হচ্ছে। ওসি আরও আশাবাদ করেন যে আর কোন খারাপ খবর বাহাড়া গ্রাম থেকে আসবে না।