শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
গত ১০ ই ফেব্রুয়ারী ২০২০, সারা দেশে টাকা বা অন্য কিছুর বিনিময়ে তাস, ডাইস, হাউজি খেলাসহ সব ধরনের জুয়া খেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে এ ধরনের খেলার অনুমতিদাতা, আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ধরনের জুয়া এবং মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং কঠোর ব্যাবস্থার পরেই এ ধরনের রায় হাইকোর্ট দেয়।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার কাশালিয়া ইউনিয়নের বামনগাতী গ্রামের মোঃ সাইয়ুব শিকদারের নেতৃত্বে সকল আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাসের আখড়া বসিয়ে দাপটের সাথে আয়োজন করে এবং নিজে থেকে পরিচালনা করে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারকে নিঃস্ব করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী নিঃস্ব কয়েকজন যেমন এলোয়ার সিকদার, হিমু সিকদার, সাফিকুক সিকদার, আসাদ সিকদার, ইমাম সিকদার, আলহাজ সিকদার, হাসান সিকদার, শাহিন সিকদার, স্বজল মির, স্বজল সহ অনেকেই।
তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে পার্শ্ববর্তী হাজরাগাতী সহ কয়েকটি স্থানে বসায় এই জমজমাট আসর, হার-জিত যাই ঘটে আয়োজকের এর লাভ! যারা অংশগ্রহণ করে প্রত্যেকেই একটা এন্ট্রি ফি দেয়, যে হারে তাকে চক্রবৃদ্ধি সুদে টাকা দিয়ে সাপোর্ট দেয় যেন আবার অংশগ্রহণ করে। তাসের এমন নেশা তৈরী করা হয় কেউ কেউ বিভিন্ন কিছু বন্ধক রেখে, চড়া সুদে টাকা নিয়ে, বাবা মায়ের টাকা চুরি করে আজ অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিভিন্ন জনের কাছে এমনটা বলে যে থানার যে আসে ম্যানেজ করে।
কভিড-১৯ মহামারীতে যখন মানুষের কাজ কমে অনেকের আয় রোজগার তলানিতে ঠেকেছে তখনও দীর্ঘদিন যাবত চলমান এই তাসের আসরের আয়োজকদের অন্যতম ব্যক্তি অর্থ বিত্তবান একজন আঙুল ফুলে কলাগাছ। এছাড়াও খারাপ কর্মকাণ্ডে এতোটাই বেগবান যে, ঘুস নিয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করা, চড়া সুদের দাদন, গ্যাঞ্জাম-মারামারির সরাসরি কখনও পিছনে ইন্দনদাতা হিসেবে সক্রিয় থেকে ন্যায় বিচার এবং ন্যায় বিচারকের কোনঠাসা করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার কাশালিয়া ইউনিয়নের গ্রাম বামনগাতী শুধু নয়, বেআইনি এই কর্মযজ্ঞের পরিধি ছড়িয়ে পড়েছে হাজরাগাতী সহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে। মূল শক্তি হিসেবে মনে করেন নিজেরা ৭ ভাই, তাদের ছেলেরা এবং সবসময় কুচক্রী একটা মহলকে।
অনৈতিক এবং বেআইনী কর্মকাণ্ডের সাথে লিপ্ত হয়েছেন তারমধ্যে যেমন নিজের প্রকৃত বয়স অনেক বৃদ্ধি করে বয়ষ্ক ভাতা তুলে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন যাবত।
এ ব্যাপারে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে ভুক্তভোগীর পরিবারসহ গণ্যমান্যরা জানালেও তিনি ব্যার্থ হয়েছেন বলে জানাযায়। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগের চেষ্টা করলেও ভয়ে তারা বারবার ব্যার্থ হয়েছেন।
প্রায়ই তৈরি হয় গ্যাঞ্জাম মারামারির ঘটনা। তাস খেলাকে কেন্দ্র করেই অতি সম্প্রতি ঘটে মারামারির একটা ঘটনা, এলাকার মুরব্বিরা একদিকে সুষ্ঠু মিমাংসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অন্যদিকে তার ইন্ধনে একটা গ্রুপ যত অর্থ লাগুক ব্যায় করার সাহস যুগিয়ে একটা থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে।
এ ব্যাপারে আমাদের প্রতিনিধি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোঃ আসাদুজ্জামান নাসিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাশালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এধরণের বেআইনী এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন তাস, জুয়া, মাদক সেবন বন্ধের ব্যাপারে সবসময়ই অগ্রনি ভূমিকা পালন করে চলেছে। আমরা অল্প দিন দায়িত্ব নিয়েই ইউনিয়নের সকল ধরনের বেআইনী কর্মকাণ্ড বন্ধের ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছি, সিনিয়র নেতারা আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।
ভুক্তভোগী নিঃস্ব পরিবার এ ব্যাপারে আশু পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসন সহ স্থানীয় এমপি মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তা না হলে শান্তি প্রিয় এই নিন্মবিত্তের গ্রামগুলোতে আরও অনেক পরিবার নিঃস্ব হওয়া, সম্ভাবণা ময় তরুণদের ভবিষ্যতে নষ্ট এবং বেআইনী কর্মকাণ্ডের সেচ্ছাচারিতার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র।