শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন
আর টি, হাসান:
ধর্মের নামে যারা ইসলামকে কুলশিত করবে তাদের প্রতিহত করতে হবে, একজন হুজুরকে গ্রেফতার ও সরকার ঘোষিত লকডাউনের অজুহাত কে কেন্দ্র করে একটা সাম্প্রদায়িক শক্তি যে ধরনের কাজ করেছে তা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী – বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসেডিয়ামের অন্যতম সদস্য কর্ণেল ফারুক খান (এমপি), এ সব কথা বলেন। গত ৫ই এপ্রিল সালথায় গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তর, উপজেলা ভূমি অফিস, থানায় হামলা ইউএনও এসিল্যান্ডের গাড়ি পুড়ানো ভাংচুরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন, তিনি আরও বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম ধর্মে ভাঙচুর, মানুষ কে হত্যা, সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর সহ কোন অন্যায় সমর্থন করে নাহ।
সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শনে ও উপস্থিত আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের সামনে তিনি এসব বক্তব্য রাখেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসেডিয়ামের অন্যতম সদস্য আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম এমপি, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রমূখ, এছাড়াও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপির রাজনৈতিক প্রতিনিধি শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এসময় ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সালথা নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসেডিয়ামের অন্যতম সদস্য আব্দুর রহমান বক্তব্যে বলেন, যারা রাজাকারের বংশধর নতুন করে ফণা তুলেছে তাদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির এক উজ্জল দৃষ্টান্ত সালথা নগরকান্দার মানুষ, যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি নষ্ট করে নিজেদের স্বার্থের উন্নয়ন করতে চায়, এই দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে ধর্মীয় উন্মাদনায় উস্কানি দিয়ে তারা এই ধরনের ঘটনায় লিপ্ত রয়েছে। নগরকান্দা সালথার মানুষ জীবনকে বাজি রেখে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে কোন অবস্থাতেই এই মাটি কে পাকিস্থানি শক্তির কাছে মাথা নত করতে দেবে নাহ, এই ফণা ধরা বিষধর সাপের বিষদাত ভেঙ্গে দিতে হবে, সকলেই মুক্তিযুদ্ধের কাতারে দাড়ান আমরা দেখতে চাই সাম্প্রদায়িক শক্তির লোকেরা কোথায় গিয়ে পালায়, আপনারা সকলেই ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, সরকারী স্থাপনা যারা তান্ডব চালিয়ে ধ্বংশ যজ্ঞ চালিয়েছে সে যে দলেরই হোক না কেন প্রত্যেক কে খুজে খুজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে, জাতির জনকের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে, সেই উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে যারা বাধা হয়ে দাড়াবে তাদের কোন ছাড় দেওয়া হবে নাহ, প্রশাসন কে সাথে নিয়ে এই সমস্ত অপশক্তিকে কঠোর ভাবে প্রতিহত করতে হবে।
গত ৫ই এপ্রিলের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশেকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ গুজবে তান্ডবের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা ও দপ্তর পরিদর্শন করেন এবং ঘটে যাওয়া বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এসময় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, এডিসি মোসাঃ তাসলিমা আলী, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান (বিপিএম) উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ৫ই এপ্রিল ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় লকডাউন কার্যকর করা নিয়ে স্থানীয় উত্তেজিত জনতার মাঝে গুজব ছড়িয়ে প্রায় চার ঘন্টা ব্যাপী তান্ডব ও ধ্বংশলীলা চালায়, তান্ডবলীলা শেষে বর্তামানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সময় উপজেলা পরিষদ ও থানা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। উত্তেজিত জনতা উপজেলা পরিষদ ভবন, উপজেলা ভূমি অফিস, উপজেলায় পরিষদ চত্তরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুড়াল, গাছপালা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি, সহকারী কমিশনারের গাড়ি, মোটরসাইকেল, উপজেলার সামনে অবস্থিত পেট্রোল পাম্প, সালথা থানা ও কর্মকর্তাদের বাসভবনসহ বেশ কিছু স্থাপনা ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় জুবোয়ের ও মিরান মোল্যা নামের দুই যুবকের মৃত্যু ও ১৩ জন আটক হয়েছে বলে জানা যায়।