বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২০ অপরাহ্ন
ইসকুলে পড়ার সুমায় রাইতের বেলা কোল বালিশ ল্যাপের নীচে দিয়া পলাইয়া যাত্তারা গান শুনতি যাইতাম। বাজান দেখলি মনে করতো তার সোনার ছাওয়াল ল্যাপ মুড়ি দিয়া ঘুমাইতিছে। একদিন গেলাম রূপবান যাত্তারা দেখতি। রূপবান তার দুধ খাওয়া সুয়ামীরে কোলে নিয়া একখান ঘান গাইছিলো;“মনের দুঃখ কইনারে বন্ধু রাইখাছি অন্তরেরে,তোমায় নিয়া ঘুরিরে বন্ধু দ্যাশ দেশান্তরে।” গানের অর্থ না বুঝলিও রূপবানের কান্দন দেইখ্যা সব্বারই চোখ দিয়া পানি পড়ছিলো। এই বুইড়া কালে আইসাও সেই গানের কথা মনে পড়লি বুকের মইধ্যে কেমন যানি কষ্ট কষ্ট লাগে। কয়দিন ধইরা আমার দিলডার মইধ্যে আরেকখান কষ্ট শুরু হইছে। সেই কষ্টের কথা কওয়ার জন্যি কোন মানুষ পাইতিছিনা। করোনার জন্যি আমাগো দ্যাশের ইউনিয়ান এলেকশন বন্ধ ছিল। গেছে সোমবার আবার এলেকশন শুরু হইছে। খবরে শুনলাম, মহেশখালি,কুতুবদিয়া আরো কয় জায়গার এলেকশন সিন্টারে গুলি খাইয়া কয়জন শহীদ হইয়া গেছে। গুলি খাইয়া হাসপাতালে গেছে কয়জন তার হিসাব কেউই কইতি পারে নাই। দলের মারকা পাওয়া ক্যানডিডেটরা চাইছিলো পোয়াতি বউর প্যাট ঘ্যাচাং কইরা কাইট্যা দুই মিনিটের মইধ্যে যেম্বায় ছাওয়াল মাইয়ার বাপ হয়,সেই রকম খচাখচ ভোট কাইট্যা চিয়ারমেন মিম্বার হবি। কিরমিনালরা তা করতি না দিয়া হাউকাউ শুরু কইরা দিয়ায় শুরু হইয়া গেছে কুরু ক্ষেত্তর। কেনরে বাবা এলেকশনে ভোট দিতি আইস্যা এ্যাতো কামড়া কামড়ি না কইর্যা ভোট দিতি না পারলি চুপ কইরা বাড়ি ফিরা যাও। চুয়াল্লিশজন ভোট ছাড়াই চিয়ারমেন হইয়া গেছে। আমার মুনডায় কয়,মারামারি কাটাকাটি যাতে না হয়,সে জন্যি এলেকশন বন্ধ কইরা দিয়া উচিৎ। তাতে মারিমারি কাটাকাটিও হবিনা আর মানুষ গুল্লি খাইয়া মরবিনা আবার হাসপাতালেও যাবিনা। আরেকখান খবরে শুনলাম স্বাস্থ্য বিভাগের ডিরাইভার আব্দুল মালেক মিয়া ঘুষের টাকা নিয়া দালালী কইরা অনেকজনরে চাকরী দিয়া কতো কোটি টাকা কামাই করছে। সেই অপরাধে তার তিরিশ বচ্ছরের জেল হইছে। আমি ভাবতিছি,ডিরাইভার মালেক মিয়াতো দালালী কইরা কোটি কোটি টাকা কামাইছে, আর যে সব বড় কত্তারা আরো বেশী টাকা খাইয়া চাকরী দিছে,তাগো বিচার করার জন্যি ফাটকা কলে আটকায়না ক্যান। তাগো সাইজ অনেক বড় বইলা কি তারা ক্ষ্যামা পাইয়া যাবি। জীবনেতো অনেক দেখলাম,যাগো সাইজ যতো বড়,তারা যতই আকাম কুকাম করুক,তাগো ন্যাজের কাছে কেউই যাইতি চায়না, ন্যাজের বাড়ি খাওয়ার ভয়ে। আর যাগো ন্যাজ যতো ছোট,তাগো ছোট পাপও অনেক বড়। বিয়ান বেলা একখান খবর শুনলাম আমাগো উপজিলায় যারা পাতি নিতা হওয়ার জন্যি বচ্ছরের পর বচ্ছর বড় বড় নিতাগো পাছে ঘুইরা ত্যাল মবিল মারছে তাগো পরায় সব কয়জনরে বিচি ভরা বড়বড় দয়া কেলা খাওয়াইয়া ধাক্কা মাইরা ফেলাইয়া দিয়া নতুন কয়জনরে নিতা বানাইয়া দিছে। কেলা খাওয়া এক নাতি আইসা চোক্ষের পানি ফেলাইয়া,নাকের সদ্দি গামছায় মুইছা কইলো, আলতু দাদা সারা জীবন দলের জন্যি দৌড়াইলাম, ছাওয়াল বউরে না খাওয়াইয়া দলের জন্যি গাইটের টাকা খরচ কইরা ফুতুর হইলাম নিতা হওয়ার জন্যি। যারা দলের জন্যি কোন কাম করলোনা,টাকা খরচ করলোনা,নিতাগো ত্যাল মারলোনা, এলেকশনে বিরুদ্ধ পাট্টিরে ভোট দিল,আইজ তারা নিতা হইয়া গেল। আমরা সব হারাই এখন বউর গাইল শুইন্যা গতর পুড়াইতিছি। আমি তারে কইলাম, আমার সাথে গান ধরো,মনের দুঃখ কইনারে বন্ধু,রাইখাছি অন্তরেরে।