শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
অমর একুশে স্মৃতি পদক পেলেন মুকসুদপুরের ইউএনও জোবায়ের রাশেদ

অমর একুশে স্মৃতি পদক পেলেন মুকসুদপুরের ইউএনও জোবায়ের রাশেদ

তারিকুল ইসলামঃ
জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিবেশ উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখায় অমর একুশে স্মৃতি পদক ২০২২ পেলেন মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোবায়ের রহমান রাশেদ। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে “একুশে ফেব্রুয়ারিঃস্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের বাতিঘর ” শীর্ষক আলোচনা সভা ও গুনীজন সম্মাননা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথী ছিলেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক তথ্য সচিব ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান মার্গুব মোর্শেদ। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিশিস্ট কথা সাহিত্যিক মঈনুদ্দিন কাজল।
এছাড়া বিশেষ অতিথী হিসেবে ছিলেন সাবেক সচিব ম. আ. কাশেম মাসুদ, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভগের চেয়ারম্যান একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড.বিকিরন প্রসাদ বড়ুয়া, প্রফেসর আকবর সিরাজী, জাতীয় ক্রীড়াবিদ ও সাবেক ফুটবলার মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক ফোরামের চেয়ারম্যান জনাব এস এইচ শিবলী। এর আগেও গত ১২ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন পরিষদ কর্তৃক তিনি জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিবেশ উন্নয়নে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ স্মৃতিপদক প্রাপ্ত হন।
কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহন করেন জোবায়ের রহমান রাশেদ । ছাত্রজীবন থেকেই বহুমুখী প্রতিভার স্বাক্ষর রাখা জোবায়ের রহমান রাশেদ এপ্লাইড ফিজিক্স এন্ড ইলেকট্রনিক্স নিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পরবর্তিতে প্রশাসন ক্যাডারে ৩৩ বিসিএস এর মাধ্যমে তিনি তাঁর চাকরীজীবন শুরু করেন। মেধাবী, সৎ, কর্মঠ এবং সাহসী অফিসার হিসেবে খুব দ্রুতই তিনি প্রশাসনে নিজের পরিচিতি পেয়ে যান। প্রবেশন কার্যকাল অতিবাহিত করার পর দিনাজপুর কালেক্টরেটেই এনডিসির মত গুরুত্বপূর্ন পদে আসীন ছিলেন এই কর্মকর্তা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধীকার মুলক প্রকল্প এটু আই প্রজেক্টে ই-ফাইলিং বাস্তবায়ন কাজের সাথেও জড়িত ছিলেন তিনি।
ফরিদপুর উপজেলার সদরপুর উপজেলায় তার এসিল্যান্ড হিসেবে কর্মকাল শুরু করেন এবং শেষ করেন ঢাকা জেলার সাভারের আমিনবাজার সার্কেলে। পরবর্তিতে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদানের পর জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার নির্দেশনায় গোপালগঞ্জ শহরের অলি গোলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে প্রতিটি রাস্তায় গাড়ি চলাচলের উপযোগী করার লক্ষ্যে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান এবং বিভিন্ন জনসচেতনতামুলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
১৫ নভেম্বর ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদানের পর করোনা সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা এবং সরকার ঘোষিত সব ধরনের কার্যক্রম তিনি বাস্তবায়ন করেন। যোগদানের পর থেকেই ইউএনও জোবায়ের রহমান রাশেদ উপজেলার বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাবনা খুঁজে বের করে মুকসুদপুরের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করেন। যে কাজগুলোর জন্য তিনি সাধুবাদ পেয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, মুকসুদপুর উপজেলাকে গৃহহীণমুক্ত ঘোষণা করা। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০০ জন গৃহহীণকে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় গৃহব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন এবং তৃতীয় পর্যায় ৩০১টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। তিনি যোগদানের পর স্থানীয় শিল্পীদের মানোন্নয়ন ও মেধা বিকাশের লক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম চালু করার জন্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ও শিল্পীদের নিয়ে কর্মসূচী গ্রহন করেছেন। সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য প্রয়োজনীয় সংগীত যন্ত্র ক্রয় করেছেন। অত্র উপজেলায় খেলাধুলার মান উন্নয়নের জন্য মুকসুদপুর ক্রিকেট একাডেমি চালু করেছেন। বর্ষা মৌসুমে উপজেলা সদরের একটি বিশাল অংশ নিমজ্জিত হতো, তা নিরসনের জন্য তিনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করেন। পানি নিস্কাষনের খাল-নালার উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়ে পানি নিস্কাষনের ব্যবস্থা করে ভুক্তভোগী মানুষেদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে উদ্ধার করেছেন। এছাড়াও তিনি
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে নিয়েছেন বিভিন্ন প্রশিক্ষন কার্যক্রম। কৃষির উন্নয়নে মাঠের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দুর করে জমিতে ফসল ফলিয়ে এনেছেন কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি। আশ্রয়ণে মাননীয় প্রধান্মন্ত্রীর উপহার পাওয়া ঘরে বসবাসকারী মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে তাদের মাশরুম চাষের প্রশিক্ষন দেন মুকসুদপুরের এই তারুণ্যনির্ভর ইউএনও। বিজ্ঞান শিক্ষার বিস্তারে বিভিন্ন স্কুলে প্রতিষ্ঠা করেছেন বিজ্ঞানাগার।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2018 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com