বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন
জিএম আজম, দাকোপ (খুলনা)প্রতিনিধি:
খুলনার দাকোপে সড়কের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ওজনের (লোড) ট্রাক চলাচল করছে। ফলে এলাকার সড়কগুলোর স্থায়িত্ব নিয়ে জনসাধারণের মাঝে নানা সংশয় দেখা দিয়েছে। অবিলম্বে সড়কগুলো দিয়ে অতি ভারি ট্রাক চলাচল বন্ধ না করলে সড়ক মেরামতের নির্ধারিত মেয়াদের আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে বলে এলাকার লোকজন আশঙ্কা করছেন।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জেলা শহরের সাথে উপজেলা সদরের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম চালনা টু খুলনা সড়ক। কিন্তু চালনা বৌমার গাছতলা থেকে পানখালী ফেরিঘাট পর্যন্ত গ্রামিন সড়ক। ২০২০-২১ অর্থ বছরে পল্লী সড়ক ব্রীজ ও কালভার্ট মেরামত প্রকল্পের আওতায় চালনা কে.সি পাইলট স্কুল ওকলেজের মোড় হতে পানখালী ফেরিঘাট অভিমুখে আড়াই কিলোমিটার সড়ক ১ কোটি ১৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে রক্ষনা বেক্ষনের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
পানখালী এলাকার সমাজ সেবক আঃ রহিম গাজী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উপজেলা এলজিইডির আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ হচ্ছে। কয়েকজন দক্ষ কর্মকর্তা কাজের গুণগত মান নিশ্চিতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু সড়কগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত অধিক ওজনের ট্রাক চলাচল করলে অতি দ্রুত সড়কগুলো ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
ভ্যান চালক সমিতির সদস্য মিজান শেখ,মোস্তফা ফরাজী, শিতল চন্দ্র ঘোষ, ইজিবাইক চালক শ্যামল রায়,বাবলু শেখ, দুলু শেখ, ফারুক শেখ, আয়ুব আলী মোল্যা, মটর সাইকেল চালক সমিতির সদস্য রহমত আলী শেখ, কামরুল ইসলাম গাজী, আঃ রাজ্জাক মোল্লা, ফাল্গুণী হালদার, আনিচুর রহমান শেখসহ আরো অনেকে জানান, পানখালী টু-চালনার এই সড়কটি বেশ কিছুদিন যাবৎ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। চলাচলেও জনসাধারণের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষথেকে ১০টনের বেশি ওজনের গাড়ী চলাচল করতে পারবে না লিখে একটি সাইন বোর্ড টানিয়ে রাখলেও বিএম এলপি গ্যাস কোম্পানী নিজ পক্ষথেকে তা মানছে না। এভাবে বিভিন্ন ভারি ওজনের ট্রাক চলাচল করলে অচিরেই সড়কটি আবার পূর্বের মতো হুমকির মুখে পড়বে বলে তারা আশঙ্কা করছেন ।
এবিষয়ে বিএম এলপি গ্যাস কম্পানির ম্যানেজার (পি.এম) ইয়াসিন আরাফাত বলেন, গ্যাস কম্পানি করার সময়ে সকল দপ্তরের অনুমতি নিয়েই করা হয়েছে। এ ছাড়া চালনা-পানখালী পর্যন্ত সড়কের ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এলজিইডি প্রধান কার্যালয় ঢাকায় একটি আবেদন করা হয়েছিলো। সেখান থেকে কয়েক দিন আগে এসে ভিজিটও করে গেছেন। খুব শিঘ্রই হয়তো একটি বাজেটও হয়ে যাবে। আর বাজেট হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ননী গোপাল দাশ বলেন, সাধারণত উপজেলা পর্যায়ে ১০ থেকে ১২ টন ভার বহন ক্ষমতা ধরে গ্রামিন সড়কের নকসা করা হয়। কিন্তু বর্তমান জেলা সদরের সাথে উপজেলা সদরের একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা এই সড়কটি। যে কারণে এই সড়ক দিয়ে সাধারণ বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু বিএম এলপি গ্যাস কোম্পানির প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি ট্রাকসহ অন্যান্য কয়েকটি ২৫ থেকে ২৬ টন ওজনের ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কটি হুমকির মুখে পড়তে পারে। তা ছাড়া সাইন বোর্ডের বিধি নিষিধও মানছেন না চালক ও ব্যবসায়ীরা। অবিলম্বে সড়কটি দিয়ে অতি ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। না হলে নির্ধারিত ৩ বছর মেয়াদের আগেই সড়কটি ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে তিনি জানান।
এব্যাপারে চালনা পৌরসভার মেয়র সনত কুমার বিশ্বাস বলেন, পৌরসভার পক্ষথেকে উপজেলা প্রশাসন ও খুলনা জেলা প্রশাসক’র কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।