বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১০ পূর্বাহ্ন

দ্বিধা বিভক্ত মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপি!

দ্বিধা বিভক্ত মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপি!

বিশেষ প্রতিনিধিঃ ছাত্রজনতার বিপ্লবের প্রেক্ষিতে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি’র আভ্যন্তরিন কোন্দল ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, এমনভাবে যা সাধারণ মানুষের কাম্য ছিলনা। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরেও মতপার্থক্যের প্রকাশ ক্রমেই সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকে আকৃষ্ট করছে। আওয়ামীলীগের ঘাটি হিসাবে পরিচিত মুকসুদপুর উপজেলা পূর্বের সে শক্তি ধরে রাখতে না পারলেও এখনো ভোটের বিবেচনায় আওয়ামীলীগই এগিয়ে রয়েছে। সিমিত শক্তির অধিকারী হয়েও বিএনপি’র অভ্যন্তরিন কোন্দল নিরসন না হয়ে ক্রমেই বিভক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে হয়। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা তারই প্রমান করে।
প্রাসঙ্গিক বিষয়ে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আঃ ছালাম খান এবং সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম রাজুর সঙ্গে বাংলার নয়ন পত্রিকার প্রতিবেদকের একান্ত আলাপকালে তারা জানান, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর উপজেলা বিএনপির নেতা কর্মীরা সরকারী দলের বিভিন্ন অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে দলের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামানের নেতৃত্বে মুকসুদপুরে কাজ করে যাচ্ছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বার্তা উপজেলার প্রতিটি মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছে। বিনা অপরাধে প্রতিমাসেই আমাদের নেতা কর্মীদের  মিথ্যা মামলায় জেল হাজত খাটতে হয়েছে দীর্ঘ ১৬ বছর। শেখ হাসিনা সরকারকে হঠাতে ছাত্র-জনতার সাথে একাত্ত হয়ে সংগ্রাম করেছি। স্বৈরাচার সরকারের পতনের পরে আমরা যখন আগামীতে সরকার গঠনের লক্ষ্যে দলকে সুসংগঠিত করার জন্য আপ্রান কাজ করে যাচ্ছি তখনই কতিপয় সুযোগ সন্ধানিরা দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে  দলের শক্তিকে বিভক্ত করে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। যারা নিজেদের নিরাপদ রাখতে দল থেকে সরে ছিলেন তারা এখন দলের শক্তিকে খর্ব করে নিজেদের দলের মধ্যে স্থান করে নিতে চাচ্ছেন। অথচ গত ১৬টি বছর তারা আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য মু.ফারুক খানের সংগে আতাত করে চলেছেন। বেশ কয়েকটি ছবি দেখিয়ে আঃ ছালাম খান ও তারিকুল ইসলাম রাজু বলেন, বিগত সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে এইভাবে ফুলের মালা গলায় পরিয়ে ফারুক খানকে তারা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে এই দুই নেতা জানান, বিগত সরকারের সকল নির্যাতন উপেক্ষা করে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমের নেতৃত্বে উপজেলার সকল ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে যে সব কমিটি গঠন করা হয়েছে সে সব কমিটিতে এসব ষড়যন্ত্রকারীরা আসেনি এমনকি কোন সমাবেশে তারা যোগ দেয়নি। এতো নির্যাতন সত্তেও দলের কোন নেতা কর্মীর পাশে এসে দাড়ায়নি এসব সুযোগ সন্ধানীরা। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে দুই নেতা বলেন, এ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ দলের কর্মীদের জন্য আইনগতভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ঠিকই তবে দলের স্থানীয় নেতা কর্মীদের সংগে আশানুরুপ সংযোগ রাখেন না। গত মাসের প্রথমার্ধে তিনি মুকসুদপুর সদরে একটি মতবিনিময় সভা করেন, সেখানেও তিনি আমাদের যেতে আমন্ত্রন জানাননি।
এ বিষয়ে এ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল অবেদিনের সংগে মুঠোফোনে আলাপ করলে তিনি বাংলার নয়নকে বলেন, মুকসুদপুর সদরে যে মতবিনিময় সভা করেছি তা দলীয় কোন সভা ছিলনা। মুকসুদপুরে আমার যারা ঘনিষ্ট মুরব্বীজন তাদের সংগে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, মুকসুদপুরে দলীয় বিভিন্ন কমিটি গঠন, সভা সমাবেশ করা হয়, কিন্তু এসব অনুষ্ঠানে আমাকে কোনদিন আমন্ত্রণ জানানো হয়না, এমনকি এসব বিষয়ে আমাকে কোনদিন অবহিতও করা হয়নি। মুকসুদপুরের সন্তান হিসাবে দলের সকল কর্মকান্ডে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের আমাকে জানানো তাদের কর্তব্য ছিল। তিনি বলেন, আওয়ামলীগের দুঃশাসনের আমলে বিএনপি নেতা কর্মীদের নামে শতশত মিথ্যা ও হয়রানি মামলা দেয়া হয়েছে। সেসব মামলায় অভিযুক্ত হাজার হাজার নেতাকর্মীদের পক্ষে আমাকে আইনি লড়াই করে গলদঘর্ম হতে হয়। এসব হাজার হাজার নেতা কর্মীদের জামিনের জন্য সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লড়াই করতে হয়। স্বাভাবিক কারনেই আমার এলাকার নেতা কর্মীদের সংগে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখা সম্ভব হয়না, কিন্তু তাদের কর্তব্য ছিল আমার সংগে যোগাযোগ রাখা, কিন্তু তারা তা করেননি, যা খুবই দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2024 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com