মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
নাগেশ্বরী শহরে রাতের আঁধারে ঘর তুলে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংখ্যালঘু এক হিন্দু পরিবার এর ন্যায় বিচার চেয়ে আদালতে দুটি মামলাসহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আদালতে মামলা করার পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভবেন চন্দ্র বর্মন তার পরিবার কে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা সদরের চামটারপাড় (বুদ্ধিরমোড়) মহল্লার কবি চন্দ্র বর্মনের পুত্র ভবেন চন্দ্র বর্মন সদরের সাতানীপাড়া এলাকায় তাহার নিজ নামে ৬৮শতক জমি ১৯৮৬সালে মানিক উদ্দিন, রিয়াজ উদ্দিন, ইয়াকুব আলী গংয়ের কাছে ক্রয় করে দীর্ঘদিন ধরেই দখল ভোগ করে আসছে। যার জমির দলিল নং-৯৩৬৬/৮৬, ১৯৬৩/৮৭, ৫৯২৫/৮৮ ও ১৭৫৩/৮৯ মোট জমি ৬৫শতক এবং যার খারিজ খতিয়ান নং-২৫২৮, ২৫৯১, দাগ নং-৩৮৮৩, জেএল নং-২২, ২৮, মৌজা-পশ্চিম নাগেশ্বরী ও আরএস খতিয়ান নং-২২৭৩, দাগ নং-৪৫২১, ৪৫৩২, জেএল নং-১৮, মোট জমি ৬২শতক ৩৭পয়েন্ট। এই তপশীল বর্ণিত সম্পত্তিতে ধান চাষ করতেন ভবেন চন্দ্র বর্মনের পুত্র সুভাষ চন্দ্র বর্মন, কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন ও গোপাল চন্দ্র বর্মন। অভিযোগ রয়েছে মানিক উদ্দিন সিএস রেকর্ডের মালিক থাকাকালীন সময়ে মজু ব্যাপারীর শশুড় শমসের আলী মানিক উদ্দিন গংদের সমস্ত সম্পত্তি বর্গা করতেন। পরবর্তীতে এসএ রেকর্ড কালে শমসের আলী কৌশলে তার নিজ নামে সম্পত্তিগুলো রেকর্ড করেন। অতঃপর ১৯৭৭সালে মানিক উদ্দিন ভূমিদস্যু শমসের আলীর বিরুদ্ধে আদালতে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করে ১৯৮০সালে রায় পান এবং মানিক উদ্দিন গংদের নামে এসএ রেকর্ড পূনঃসৃজন হয়। যাহার মামলা নং-১৫৩৭/১৯৭৭সালে রায় পান ১১এপ্রিল ১৯৮০সালে ও আপীল মামলা নং-১৬০/১৯৮৩ এবং শমসের আলী উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেন যার মামলা নং-১৬০/১৯৮৩ এবং আপীল খারিজ হয়েছে ২১অক্টোবর ১৯৯০সাল। অতঃপর পুনরায় সানি করেন যার মামলা নং-৯/১৯৮৭সালে ও সানি খারিজ ৫জুলাই ১৯৯৭সালে।
উক্ত জমি ভবেন চন্দ্র বর্মন ক্রয়ের পর থেকে বিনা-কাগজে জমি দাবি করাসহ দখলের পায়তারা করে আসছিলেন নাগেশ্বরী সদরের সাতানীপাড়া এলাকায় সাহাতুল্লা ব্যাপীরর ছেলে মজনু ব্যাপারী (মজু), শমসের আলীর ছেলে ও মেয়ে মোবারক আলী, আমিনা বেগম, ছমিনা বেগম, মালেকা বেগম, সেদ্দার আলীর স্ত্রী আকলিমা বেগম, ছোবেদ আলীর ছেলে আবুল হোসেন ও কাছুয়ার ছেলে মেছের আলী সংঘবদ্ধ গংরা। এর পর্যায়ে গত ৪মাস থেকে জমি দখল করতে ভবেন চন্দ্র বর্মনের পরিবারকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন এবং গত ২০নভেম্বর ২৪সালে দিবাগত রাত অনুমানিক ২টায় উক্ত ভূমিদস্যুরা জমি জোরপূর্বক দখল করে টিনের বেড়ায় ঘিরে ভিতরে দুটি টিনের একচালা ঘর নির্মাণ করাসহ সুপারীর গাছ রোপণ করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় নুরুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম মিয়ার কাছে বিচার চান ভবেন চন্দ্র বর্মন। গত ২৩নভেম্বর শনিবার সকালে ভবেন চন্দ্র বর্মনের বাড়ীতে আব্দুল হাকিম মিয়ার সভাপতিত্বে একটি শালিসি বৈঠকে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে ভবেন চন্দ্র বর্মনের আইনজীবী সোলায়মান আলী ও ইসমাইল হোসেন। বৈঠকে আইনজীবী শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাচ্চা, সোলায়মান আলী ও ইসমাইল হোসেন দুই পক্ষের জমির কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করে জনসম্মুখে বলেন এই জমির প্রকৃত মালিক ভবেন চন্দ্র বর্মন এবং মজু ব্যাপারী কে জমি থেকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করাসহ ভবিষ্যত উক্ত জমির মালিকানা দাবি করতে পারবে না। এদিকে উক্ত শালিসি বৈঠক অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মজনু ব্যাপারী (মজু) সহ প্রায় ১৫জন ভূমিদস্যুরা জমি জোরপূর্বক দখলে রাখেন। জমির প্রকৃত মালিক ভবেন চন্দ্র বর্মন ন্যায় বিচার চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে নিষেধাজ্ঞা মামলা নম্বর-৫০৭/২৪ এবং ভবেন চন্দ্র বর্মনের ছেলে কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন বাদী হয়ে মামলা নম্বর-১৫৭/২৪ ভূমি অপরাধ ও প্রতিরোধ এবং প্রতিকার আইন-২০২৩ মোতাবেক মজনু ব্যাপারী (মজু) সহ ১৫জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালতে মামলা করার পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভবেন চন্দ্র বর্মন তার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।