বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন
মোঃ তারিকুল ইসলামঃ
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার শতকরা ৯৮% মানুষ বঙ্গবন্ধু তথা আওয়ামীলীগের সমর্থক। জাতীয় নির্বাচন আসলে নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়া এ উপজেলার মানুষের নৈতিক দায়িত্ব বলে ভোটাররা মনে করেন। আওয়ামীলীগের চরম দুর্দিনেও এ উপজেলার মানুষ নৌকা ছাড়া অন্য কোন প্রতিকে ভোট দেয়নি। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলের সকল ভয়কে জয় করে অত্যাচার নিপীড়নের শঙ্কাকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ আমলে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের সময় উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতারা পুলিশের তাড়া খেয়ে গা ঢাকা দিলেও সাধারণ মানুষ নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়েছেন এবং দল বেঁধে কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা প্রতিকে সীল মেরেছেন অকুতভয়ে। সে আমলের অনেক নেতা কর্মী অনেকেই পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন; দু-চারজন যারা এখনও বেঁচে আছেন, দোরদন্ড প্রতাপশালীদের প্রতাপে তারা এখন নীরবে সরে গেছেন। বর্তমানের নেতাদের কাছে এখন তারা ব্যাক ডেটেড হিসাবে নীরবে নিভৃতে দিন যাপন করছেন এবং আপ ডেটেডদের দলের প্রতি ভালবাসা পরিমাপ করছেন। বর্তমানে দলে যারা ঠাঁই করে নিয়েছেন তাদের প্রায় অধিকাংশই সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার চেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের কাছে থেকে নিজের উপস্থিতিকেই গুরুত্ব দিতে বেশী পছন্দ করেন বলে অনেকে মন্তব্য করেন। প্রকাশ্যে না হলেও নেতা কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে কয়েকটি গ্রুপে, এর দায় কার উপর বর্তাবে ভবিষ্যতই তা নির্ধারন করবে।
মুকসুদপুর উপজেলার বিভিন্ন স্তরের আওয়ামীলীগ কমিটি গঠন হয়েছিল প্রায় পাঁচ বছর আগে। সেসব কমিঠির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেলেও নতুন কমিটি গঠন নিয়ে উর্দ্ধতন নেতাদের আগ্রহ কেমন যেন শিথিল বলেই মনে হয়। মাঝেমধ্যে বেশ তোড়জোড় দেখা গেলেও কয়েকদিন পরে তা স্তিমিত হয়ে যায়। গত ডিসেম্বরে পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নের সভাপতি ও সম্পাদকদের নাম ঘোষনা হলেও এক বছর পার হতে চললো পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নের একটিতেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি। সাড়ম্বরে সকল ওয়ার্ড কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও এখন তা হিমাগারে চলে গেছে বলেই মনে হয়। দলের নেতৃত্ব দিতে আগ্রহীদের অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন। দু/চারজন মাঝে মধ্যে উপজেলা কার্যালয়ে এসে নিরস বদনে সালাম শুভেচ্ছা বিনিময় করে যান। তাদের দেখলেই বোঝা যায় দৌড়ঝাপ করতে করতে তারা এখন কান্ত হয়ে পড়েছে।
গত ২০১৬ সালে উপজেলা কমিটি গঠন নিয়ে অনেক নেতিবাচক মন্তব্য শোনা গিয়েছিল। সে কমিটিতে এমনও কেউ কেউ ছিল যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ বিপক্ষের উত্তরসুরী। সে কমিটির আয়ু অনেক আগেই শেষ হলেও নতুন কমিটি গঠনের কোন আভাস পাওয়া যাচ্ছেনা। অসমর্থিত কয়েকটি সূত্রে জানাযায় উপজেলা কমিটির কতিপয় প্রভাবশালী নেতার বিগত দিনের আমলনামার বস্তাভর্তী খতিয়ান দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কাছে উপস্থাপিত হয়েছে। যে কারনে ঐসব নেতাদের পূণরায় কমিটিতে স্থান করে নেয়া খুবই কষ্টসাধ্য হতে পারে। উপজেলার আগামী কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন বেশ কয়েকটি অতি পরিচিত মুখ। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ওইসব প্রভাবশালীদের স্থান পূরনের জণ্য বিকল্প খুঁজছেন বলে অনেকের মন্তব্য, আবার অনেকের মন্তব্য যারা স্থানচ্যুত হবেন তারা সুকৌশলে সময় পার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করার কারনে উপজেলা আওয়ামীলীগ কমিটি গঠন বিলম্বিত হচ্ছে। বিলম্বিত সময় কতদিন হবে তা অনিশ্চিত। নেপথ্য কারণ যাই থাক এ উপজেলায় আওয়ামীলীগের সকল স্তরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি সত্তর গঠিত হবে এমন প্রত্যাশা করা বোধহয় অন্যায় আবদার হবেনা। উপজেলার ৯৮% সাধারণ মানুষের ইচ্ছাকে পূরণ করতে উর্দ্ধতন নেতারা যথাশীঘ্র উদ্যোগ নিবেন সে আশা করে বঙ্গবন্ধু ভক্তরা।