বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
নাজমুল হাসান রাজ
সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক কঠোর বিধিনিষেধের অষ্টম দিনে গণপরিবহন ছাড়াই গ্রামের দিকে ছুটছেন ঘরমুখো কর্মজীবী মানুষ। মহাসড়কগুলোতে সব ধরনের যান চলাচল করলেও নেই গণপরিবহন, ঝুকি আছে তবুও কেন তাদের ঘরে ফেরা এমন প্রশ্নে খুলনাগামী আব্বাস বলেন, গায়ের সন্তান মায়ের কোলো যাই। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শুরু থেকেই প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস বা মোটরসাইকেলে করে যাত্রীরা ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এসব পরিবহনের ভাড়া বেশি হওয়ায় এখন অনেকেই ট্রাক বা পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।
আজ বুধবার সরেজমিনে রাজধানীর গুলিস্থান যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, এলাকাঘুরে দেখা গেছে, সড়কে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর পুলিশি চেকপোস্ট থাকলেও গণপরিবহন ছাড়া, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, রিকশা ও মাঝেমধ্যে বিআরটিসির বাস চলতে দেখা গেছে। দুরপাল্লার বাস না চললেও মানুষ থেমে থাকার পাত্র নয়।বিভিন্ন অজুহাত গ্রামে ফেরায় মরিয়া।
এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ীর স্থায়ী বাসিন্দা ইমনের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, লকডাউন কঠোর হচ্ছে এতে কোনো সন্দেহ নাই। তবে রাস্তায় গণপরিবহন বাদে সবই চলছে। থেমে নেই কোন কাজও।
তিনি আরো বলেন, বাস না চলায় প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চালকরা একপ্রকার ডাকাতি শুরু করেছে। আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা কয়েক গুণ বেশি ভাড়া চাচ্ছে।
আমি উত্তরা যাবো সিএনজি ভাড়া ৫০০ টাকার নিচে যাবে না। আর বাইকাররা বলছে ৪০০ টাকা লাগবে। সবই যেহেতু চলছে, তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চললে অন্তত আমাদের মতো যাত্রীদের পকেট কাটা যেতো না।
বেশিরভাগ যাত্রীরা বলছেন,ট্রাক বা পিকআপের ভাড়া অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় অনেক কম। তাই কম টাকায় বাড়ি যাওয়ার মাধ্যম হিসেবে ট্রাকে যেতে হচ্ছে।
এছাড়াও গাবতলী গরুর হাট সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের কড়া নজরদারি থাকায় বেশিরভাগ যাত্রী আমিন বাজার ব্রিজের উপরে গিয়ে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল কিংবা পিকআপে করে বাড়ি ফিরছেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে গত ৫ এপ্রিল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে বিধিনিষেধ জারি করা হয়। নির্দেশনা অনুসারে জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া রাস্তাঘাটে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ারও নির্দেশনা ছিল। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় দিন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন, দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬ এপ্রিল থেকে সকাল সন্ধ্যা গণপরিবহন চলবে। তবে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। পরবর্তীতে করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ১১ এপ্রিল শেষ হলেও এর মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ ও ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। নিষেধাজ্ঞা শেষে ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ জারি করে সরকার।