বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ অপরাহ্ন

স্কুলছাত্রের উপর কিশোর গ্যাং এর যৌনাচারণের ভিডিও ধারণ ও অর্থ দাবি

স্কুলছাত্রের উপর কিশোর গ্যাং এর যৌনাচারণের ভিডিও ধারণ ও অর্থ দাবি

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের মধুখালী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রকে তুলে নিয়ে মারপিটের পর বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও ধারণ করে। পরে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা মোটা অংকের অর্থ দাবি করেছে এমন অভিযোগ ওই স্কুল ছাত্রটির পরিবারের। নির্যাতনের শিকার ওই স্কুল ছাত্র এখন লোকলজ্জায় ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারটির অভিযোগ এঘটনায় বিচারের দাবিতে দারে দারে ঘুরে ও প্রভাবশালীদের চাপসহ থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও থানা পুলিশ অভিযোগ নেয়নি।

বিচার না পেয়ে শনিবার  দুপুরে কাফনের কাপড় পরে মধুখালী বাজার এলাকায় মানববন্ধন কর্র্মসূচী পালন করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

মধুখালী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের গাড়াখোলা এলাকার ফিরোজ খান জানান, স্কুলের দুই যুবকের সাথে তার ছেলের কথা কাটাকাটির জের ধরে ওই শিক্ষার্থীকে গত ৩ নভেম্বর স্কুলের পরীক্ষা শেষে বের হলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সাজির ও সিজান তাকে একটি মোটরসাইকেলে জোড়পূর্বক তুলে নেয়। পরে একটি আখ ক্ষেতের নিয়ে প্রথমে মারপিট করে। পরে বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও করে।

এসময় তারা স্কুল ছাত্রকে হুমকি দেয় মোটা অংকের অর্থ না দিলে এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবার হুমকি দেয়। সেই অর্থ না দেয়ায় সেই ভিডিও তার ছেলের সহপাঠি ও পরিচিতজনদের মোবাইলে ছড়িয়ে দেয় তারা।

শিক্ষার্থীর বোন আজমিরি জামান মুমু জানায়, তার বাবা মধুখালী বাজারের একজন কাপড় ব্যবসায়ী। তার ভাই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। বিগত দিনে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল। তাকে দীর্র্ঘদিন যাবৎ একটি কিশোর গ্যাং এর চক্র বিরক্ত করে আসছে। ভয়ে ও লজ্জায় এতোদিন তার ভাই পরিবারকে কিছুই জানায়নি।

পরে বিস্তারিত বিষয়টি জানতে পেরে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলেও মধুখালী থানা পুলিশ অভিযোগ নেয়নি । স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তার পরিবার।

স্থানীয়রা জানান, এই ঘটনায় কিশোর গ্যাং দের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে সুস্থ সামাজিক পরিবেশ বিরাজ করুক এমনটিই দাবি সকলের।

মধুখালী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক জানান, থানার দরগা সাহেব বিষয়টি দেখার জন্য আমার উপর দায়িত্ব দেন। আমি দুই পক্ষকে ডাকলো একপক্ষ আসে। অপর পক্ষ না আসায় আমি এর কোন সমাধান করতে পারিনি। স্থানীয় বিএনপি’র কয়েকজন নেতা আমাকে বলেছিলেন বিষয়টি আমরা পরে বসে দেখব। আর যেহেতু বিষয়টি স্কুল কম্পাউন্ডে না। তাই আমি তেমন কিছু করতে পারবো কিনা, তা বলতে পারছি না।

এদিকে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদেরকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

মধুখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান জানান, গত ৩ নভেম্বর ঘটনাটি পরিবারের পক্ষ থেকে মৌখিক জানার পর ওই বিদ্যালয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। আমি ফুটেজটি দেখেছি। বিষয়টি খুবই লজ্জাস্বকর, তাই আমিও ধিক্কার জানায়।

বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ দেখবেন বলেছে। তাই অভিযোগ গ্রহন করা হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2024 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com